Responsive Ad Slot

সর্বশেষ

latest

মহাবিশ্বের বৈজ্ঞানিক তত্ত্বের বৈশিষ্ট্য-০১

Tuesday, 5 November 2019

/ by Admin

মহাবিশ্বের বৈশিষ্ট্য এবং এর কোনাে শুরু আছে কি নেই-এসব নিয়ে আলােচনা করতে গেলে আগে জানা দরকার বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব কাকে বলে। সােজা কথায় বললে, থিওরি বা তত্ত্ব হচ্ছে মহাবিশ্বের একটি মডেল বা নমুনা, অথবা সেই নমুনার কোনাে সীমিত অংশবিশেষ এবং এমন একগুচ্ছ নিয়ম বা সূত্র, যে সূত্রগুলাে পর্যবেক্ষণে প্রাপ্ত তথ্যকে মডেলের মাধ্যমে ব্যাখ্যা করতে পারবে। এই তত্ত্ব থাকে আমাদের মস্তিষ্কে এবং এর অন্য রকম কোনাে বাস্তবতা নেই (বাস্তবতার সংজ্ঞা যা হয় হােক)। একটি তত্ত্বকে ভালাে বলা হয়, যদি এর মধ্যে দুটো গুণ পাওয়া যায়।

এক, অনেকগুলাে পর্যবেক্ষণকে এটি অল্প কথায় সঠিকভাবে ব্যাখ্যা করতে পারবে। দুই, একে ভবিষ্যৎ পর্যবেক্ষণের ফলাফল সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট পূর্বাভাস দিতে হবে।

অ্যারিস্টটল এমপেডােক্লেসের এই তত্ত্ব মেনে নিয়েছিলেন যে জগতের সব কিছু মাটি, বায়ু, আগুন ও পানি-এই চারটি উপাদান দিয়ে তৈরি। তত্ত্বটি যথেষ্ট সরল ছিল, কিন্তু এটি কোনাে সুনির্দিষ্ট পূর্বাভাস দিতে পারেনি। অন্যদিকে, নিউটনের মহাকর্ষ তত্ত্বটি উপস্থাপন করা হয় আরাে সরলভাবে। এই তত্ত্বে বস্তুরা একে অপরকে তাদের ভরের সমানুপাতিক ও তাদের মধ্যবর্তী দূরত্বের বর্গের ব্যস্তানুপাতিক বলে আকর্ষণ করে। তত্ত্বটি দেখতে সরল হলেও এটি অনেক নিখুঁতভাবে সূর্য, চন্দ্র এবং গ্রহদের গতির পূর্বাভাস দিতে পারে।
যেকোনাে ভৌত তত্ত্বই (physical theory) এই অর্থে অস্থায়ী যে এটি শুধুই একটি অনুমান। একে কখনােই পুরােপুরি প্রমাণ করা যাবে না। পরীক্ষার ফলাফলের সাথে হাজারবার মিলে গেলেও আপনি কখনােই নিশ্চিত করে বলতে পারবেন না এটি পরের বার বিপরীত ফলাফল দেবে উল্টো দিকে একটি তত্ত্বকে ভুল বলার জন্য এর বিপক্ষে একটিমাত্র পর্যবেক্ষণই যথেষ্ট। বিজ্ঞানের দার্শনিক কার্ল পপার যেমন জোর দিয়ে বলেছেন, একটি ভালাে তত্ত্বের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, এতে এমন অনেকগুলাে পূর্বাভাস থাকবে যাদেরকে পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে ভুল বা মিথ্যা প্রমাণ করার সুযােগ থাকবে। যখনই নতুন কোনাে পরীক্ষার সাথে এর পূর্বাভাস মিলে যাবে, তত্ত্বটি বেঁচে যাবে। কিন্তু কখনাে নতুন কোনাে পর্যবেক্ষণ এর সাথে মিললে আমাদেরকে তত্ত্বটিকে পরিত্যাগ বা সংস্কার করতে হবে।
এটাই হচ্ছে সাধারণ নীতি। কিন্তু যিনি পরীক্ষা চালিয়েছেন তাঁর দক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তাে তােলা যেতেই পারে।

বাস্তবে দেখা যায় নতুন তত্ত্ব আসলে আগের তত্ত্বেরই পরিবর্ধন মাত্র। উদাহরণ হিসেবে বলা যায় বুধ গ্রহের গতির কথা। নিউটনের মহাকর্ষ তত্ত্বের পূর্বাভাসের সাথে এর গতির সামান্য ভিন্নতা দেখা দেয়। আইনস্টাইনের সার্বিক আপেক্ষিক তত্ত্ব নিউটনের তত্ত্বের চেয়ে কিছুটা ভিন্ন অনুমান প্রদান করে, যা পর্যবেক্ষণের সাথে ঠিক ঠিক মিলে যায় । নিউটনের তত্ত্বের জায়গায় নতুন এই তত্ত্বের জায়গা করে নিতে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তবু এখনও আমরা বাস্তবে নিউটনের তত্ত্বই বেশি ব্যবহার করি, কারণ আমাদের দৈনন্দিন জীবনের প্রয়ােজনীয় ক্ষেত্রে দুটো থিওরির পার্থক্য সামান্য। নিউটনের তত্ত্বের আরেকটি সুবিধা হলাে এটি আইনস্টাইনের সূত্রের চেয়ে অনেক সরল ।

আরো পড়ুন...

মহাবিশ্বের বৈজ্ঞানিক তত্ত্বের বৈশিষ্ট্য-০১

মহাবিশ্বের বৈজ্ঞানিক তত্ত্বের বৈশিষ্ট্য-০২

মহাবিশ্বের বৈজ্ঞানিক তত্ত্বের বৈশিষ্ট্য-০৩

No comments

Post a Comment

Don't Miss
© all rights reserved.
Made with by Science Tech BD