সৌরজগতের মোট ৮ টি গ্রহের মধ্যে বৃহস্পতি অন্যতম ।বৃহষ্পতির ৬৭টি নামকরণকৃত উপগ্রহ রয়েছে। এ গ্রহের ৫০ টি official ও ১২ টি unofficial উপগ্রহের মধ্যে ইউরোপা একটি।বৃহষ্পতির সবচেয়ে বড়
চারটি উপগ্রহ হলো আইয়ো, ইউরোপা, গ্যানিমেড এবং ক্যালিস্টো, এদেরকে গ্যালিলীয়
উপগ্রহ বলা হয়ে থাকে
আবিষ্কারকের নামানুসারে।
কিন্তু কথা হল,এ
উপগ্রহটির গঠন বেশ কিছুটা রহস্যময়।সাধারণত আমাদের সৌরজগতের গ্রহগুলো কঠিন , তরল , বায়বিয় পদার্থের তৈরি।কিন্তু উপগ্রহগুলোর দুটি বৈশিষ্ট বিশেষভাবে লক্ষনিও।তা হল,এগুলো কঠিন পদার্থের তৈরি আর এরা গ্রহানু-উল্কাপাতের ফলে অসংখ গর্তের দ্বারা ভরা।যাই হোক,আসল ব্যাপার হল মার্কিন যুক্তরাষ্ট এর মহাকাশ সংস্থা নাসা থেকে প্রেরিত
"গ্যালিলিও" সন্ধানিযান থেকে ধারনকৃত চিত্র থেকে ইউরোপা সম্পর্কে রহস্যময় তথ্য আবিষ্কৃত হয়েছে।তাহলো, ইউরোপার উপরিভাগের বিস্ময়কর দৃশ্য।
ইউরোপার উপরিভাগে এক ধরনের ফ্রাকচার বা ফাটল রয়েছে যা সৌরজগতের অন্য কোন উপগ্রহে নেই।কিন্তু এগুলো অত্যন্ত ক্ষণস্থায়ী, মাঝে মাঝেই দেখা যায় আবার হঠাৎ করেই মিলিয়ে যাচ্ছে।আবার নতুন জায়গা দিয়ে ফাটল গজিয়ে উঠছে।হাজার হাজার ফাটলগুলো দেখতে অনেকটা হাইওয়ে রাস্তার মত।হাজার হাজার মাইল জুড়ে বিস্তৃত।এবং এর প্রস্থ মাঝে মাঝে৭০ কিঃ মিঃ পর্যন্ত হয়ে থাকে।কোন কোন ফাটল তিনটি অংশে বিভক্ত ,দুটি কালো লাইন আর একটি সাদা লাইন।কি কারনে এই ফাটলগুলো গজিয়ে উঠছে আবার হঠাৎ ই
মিলিয়ে যাচ্ছে তার কোন সুনির্দিষ্ট কারন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা আজও নির্ণয় করতে পারেন নি।তবে অনেকেই মনে করেন ইউরোপার ভূপৃষ্ঠের ১০০ কিঃ মিঃ নিচে হয়ত পানির আধার আছে তা মাঝে মাঝে উত্তপ্ত হয়ে বরফ ফেটে উপরের দিকে বেরিয়ে আসে যার ফলে উপরিস্তরের বরফের আবৃত সবকিছুই পরিবর্তিত হয়ে নতুন আকার ধারন করে।কিন্তু প্রশ্ন হল , যেখানের তাপমাত্রা শূন্যর প্রায় ১৪০ ডিগ্রি নিচে সেখানে কিভাবে তরল পানির আধার থাকা সম্ভব?আর তা কিভাবে গরম হয়ে এ
ফাটল সৃষ্টি করে।তবে এর ব্যাখ্যা দিতে জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা বলেছেন বিশাল গ্রহ বৃহস্পতির টাইডাল ফোরস্ আর এর অন্যান্য উপগ্রহের মিলিত আকর্ষণের ফলে ইউরোপার অভ্যন্তরে অত্যন্ত তাপ উৎপন্ন হয়ে ফাটলের সৃষ্টি করে।কিন্তু বিজ্ঞানীদের এই যুক্তি যে কতটা গ্রহণযোগ্য সেটা এখনো প্রমানিত হয় নি।তবে এটা পরবর্তীতে কোন মহাকাশযানের সাহায্যে ইউরোপার খুব কাছ থেকে অথবা এর বায়ুমণ্ডলের ভিতর ঢুকে চিত্রগ্রহণ ও
আলোকমিতি সম্পর্কে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে ই
জানা যাবে যে এই রহস্যময় ফাটলের গঠন আর বিলিনের আসল কারন কি?
সত্যি ই যদি এটা প্রমানিত হয় যে ইউরোপার নিচে পানি আছে ,সেখানে প্রানের অস্তিত্ব ও
বিকাশ কি সম্ভব হবে? হ্যাঁ , হতে পারে।তবে সেটা ব্যাকটেরিয়া আকারের কোন অণুজীব ছাড়া সম্ভব নয়।তবে এটাও কম কি?আমাদের চির আর একমাত্র আবাসভূমি পৃথিবীর বাইরে এক বিন্দু প্রান!!!

No comments
Post a Comment