পরীক্ষার নামঃ- এক গ্লাস পানিতে একটি পাস্টিক বা কাচের টিউব রাখলে টিউবের পানির মাত্রা গ্লাসের পানির মাত্রার চেয়ে উপরে থাকে—কেন?
উপকরণঃ- পানি ভরতি একটা কাচের গ্লাস, ভিন্ন ভিন্ন ব্যাসের তিন-চারটি কাচের টিউব
কার্যপ্রণালীঃ- পানি ভরতি গ্লাসে ভিন্ন ভিন্ন ব্যাসের তিন-চারটি টিউব রাখতে হবে । কিছুক্ষণ পর দেখা যাবে যে ভিন্ন ভিন্ন ব্যাসের টিউবে পানির মাত্রা ভিন্ন ভিন্ন রকম, অথচ গ্লাসের পানি আছে স্থির। যে টিউবের ব্যাস সব থেকে ছােট, সেই টিউবের পানির মাত্রা সবথেকে ওপরে এবং যে টিউবের ব্যাস সব থেকে বড় সেই টিউবের পানির মাত্রা সবথেকে নিচে। কেন এমনটা হয়? নিচের পরীক্ষার মাধ্যমে উত্তর পাওয়া যাবে। | একটা টেস্টটিউবের অথবা লম্বা, সরু ও গােলাকার বােতল নিয়ে অর্ধেকটা ভর্তি কর পানিতে। এবার মনোেযােগ দিয়ে পানির মাত্রা লক্ষ্য কর। পাশের দিকে পানির লেবেল ওপরে কিন্তু মাঝখানটার লেবেল হয়েছে অবতল বা ধনুতের মতাে বাঁকা। পানির এই বাঁকা রেখাকে বলে মেনিসকাস। আসঞ্জন ধর্মের (লেগে থাকা) দরুন টিউব বা বােতলের দেয়ালে পানির কিছু অংশের ওপর যে আকর্ষণ শক্তি প্রয়ােগ করে তার ফলেই ধনুকের মতাে এই রেখা সৃষ্টি হয়।
সাধারণভাবে তুমি মনে করতে পার, এই আসঞ্জন শক্তির ফলেই টিউবের পার্শ্বদেশে পানির মাত্রা উর্ধ্বমুখী হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে পানির মাত্রা উর্ধ্বমুখী হওয়ার এই ক্রিয়াকে বলে ক্যাপিলাবি অ্যাকশন’ কৈশিক প্রভাব। কম ব্যাসের টিউবের কৈশিক ক্ষমতা সব থেকে বেশি, কারণ কম ব্যাসের টিউবে পানির বৃহত্তর অংশ টিউবের প্রত্যক্ষ সংস্পর্শে থাকে, যার ফলে আকর্ষণ শক্তির প্রভাব বেশি হয়। | এখন দেখা যাক, পানিতে ভর্তি করার আগে টিউবের ভেতরের দিকে গ্রিস মাখালে কী হয়। এবার দেখা যাবে পানির মাত্রা ধনুকের মতাে নিচের দিকে না বেঁকে, ওপর দিকে ফুলে উঠেছে। কেন? এর কারণ হলাে, প্লাস্টিক বা গ্লাসের মতাে গ্রিস অত জোরে পানির মলিকিউলগুলাে আকর্ষণ করতে পারছে না। এক্ষেত্রে, পানির মলিকিউলগুলাের পারস্পরিক আকর্ষণ । গ্রিসের চেয়ে বেশি, যাকে বলা হয় ‘কোহিজন' (যে শক্তি বলে অনুগুলাে পরস্পর একত্রিত থাকে) অ্যাডিজন' নয় ।
ফলাফলঃ- অতএব, প্রমাণিত হলাে ক্যাপিলাবি অ্যাকশন বা কৈশিক প্রভাবের ফলে গ্লাসের ভেতর রাখা ভিন্ন ভিন্ন ব্যাসের টিউবের পানির মাত্রা গ্লাসের পানির মাত্রা থেকে ওপরে থাকবে।
No comments
Post a Comment