Responsive Ad Slot

সর্বশেষ

latest

‘Tess’-এক নতুন গ্রহ সন্ধানী

Thursday, 9 April 2020

/ by Admin


মহাকাশ গবেষণায় প্রত্যেক সপ্তাহে কিছু না কিছু খবর উঠে আসে। আসবে নাই বা কেন। মহাকাশ যে অসীম। তাই মহাজাগতিক বস্তু সম্পর্কে জানারও কোনো শেষ নাই। ভাবলে অবাক লাগে; মাত্র ২০ বছর হল আমরা সৌর জগতের বাইরের কোনো গ্রহের প্রথম খোঁজ পাই। যার নাম 51 Pegasi b এবং এটি ৫০ আলোকবর্ষ দূরে রয়েছে।
    ১৮ই এপ্রিল, ২০১৮ তারিখটাও মহাকাশ বিজ্ঞানে একটি স্মরণীয় দিন হয়ে থাকবে। এই দিন উৎক্ষেপণ করা হয় Transiting Exoplanet Survey Satellite সংক্ষেপে TESS; যার কাজ বহির্জগতের গ্রহ খোঁজ করা।
    অনেকেই হয়তো ভাবতে পারে; ২০০৯ সালের ৭ই মার্চ যে Kepler টেলিস্কোপটি পাঠানো হল সেটা থাকতে আবার কোটি কোটি ডলার খরচ করে TESS পাঠানোর কী মানে!
     কেপলার এর জ্বালানি শেষ হয়ে আসছে। আর কয়েক মাস পর এটি তার কার্যকারিতা হারিয়ে ফেলবে। তাই তো TESS কে পাঠানো হল। এটি কেপলার-এর পরবর্তী কাজগুলি করবে।
আমরা হয়ত জানি, যে পদ্ধতিতে কোন গ্রহ খোঁজা হয় তাকে Transit method বলে।
টেলিস্কোপ দিয়ে কোনো নক্ষত্রের ওপর নজর রাখার সময় কোনো গ্রহ যখন নক্ষত্রের সামনে আসে তখন নক্ষত্র থেকে আগত আলোকরশ্মি আটকে যাওয়ার সাথে সাথে গ্রহের বায়ুমন্ডল দ্বারা কিছুটা শোষিত হয়। নির্দিষ্ট রাসায়নিক বস্তু নির্দিষ্ট তরঙ্গদৈর্ঘ্যের আলো শোষণ করে।
মূলত বর্ণালিবীক্ষণ এর মাধ্যমে গ্রহটি তাপমাত্রা কতটুকু আলো ব্লক করছে বা আসতে বাধা প্রদান করছে তার উপর ভিত্তি করে জ্যোতি পদার্থবিদেরা গ্রহটির আকার, ভর, নক্ষত্র থেকে অবস্থান, বায়ুমণ্ডলের গঠন, জলীয়বাষ্পের উপস্থিতি বা গোল্ডিলক জোনে  আছে কিনা তা সম্পর্কে তথ্য পেয়ে থাকেন বিজ্ঞানীরা এই রশ্মির বর্ণালি বিশ্লেষণ করে সেই রাসায়নিক বস্তুর গঠন সম্পর্কে বুঝতে পারেন। এর ওপর নির্ভর করে গ্রহের বায়ুমন্ডলের গঠন সম্পর্কে জানা ফলে কোনো গ্রহ বাসযোগ্য কিনা সেটাও বোঝা সম্ভব।
একটু সহজ ভাষায় যদি বলি, টেলিস্কোপ দিয়ে কোনো নক্ষত্রের ওপর নজর রাখার সময় যদি ওই নক্ষত্রের সামনে কোনো গ্রহ এসে পরে (এটিই হল Transition বা সংক্রমণ) তখন নক্ষত্রটির আলোর তীব্রতা কমে যায়। আবার গ্রহ সরে গেলে আলোর তীব্রতা আগের মত হয়ে যায়। গবেষকরা এই তীব্রতার পরিবর্তন পর্যবেক্ষণ করে গ্রহটির আকার ,ভর এগুলো বের করে থাকেন।
কেপলার এই পদ্ধতি অবলম্বন করে করেই গ্রহ খোঁজে। এটি আকাশের ছোট্ট একটি জায়গার ওপর ফোকাস করে। যার জন্য কেপলার অনেক দূরের কম তীব্রতার নক্ষত্রদের তথ্য সংগ্রহ করে।তবে টেস টেলিস্কোপ্টি সেসব নক্ষত্রের চাইতে 30 থেকে 100 গুন উজ্জলতা সম্পন্ন নক্ষত্রের সন্ধান চালাবে
 TESS ছোট্ট জায়গার পরিবর্তে আকাশের প্রায় ৮৫% অংশে তাকিয়ে থাকবে এবং ২০০ আলকবর্ষের মধ্যে থাকা প্রায় লক্ষ লক্ষ্যবস্তুর ওপর নজর রাখবে। যাদের মধ্যে মূলত থাকবে বেশি উজ্জ্বলতার তারা। এর ফলে যেটা কেপলার ঠিক মতো করতে পারতো না TESS সেটা পারবে।
ব্যাপার হল, নক্ষত্র যদি অনুজ্জ্বল হয় বর্ণালিও অস্পষ্ট হবে। কেপলার টেলিস্কোপটি অনুজ্জ্বল লক্ষ্যবস্তু পর্যবেক্ষণ করে বলে রাসায়নিক তথ্য সম্পর্কে খুব ভালো বলতে পারে না। তাই বলে কেপলার ভালো কিছু করতে পারেনি সেটা বলা একেবারে ভুল হবে। এটি হাজার হাজার গ্রহের সন্ধান দিয়েছে, অনেক সূক্ষ্ম জিনিস মেপেছে।
  TESS যেহেতু উজ্জ্বল তারার দিকে নজর রাখবে তাই এটা থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনেক পরিষ্কার হবে। বিজ্ঞানীরা আশা করছেন TESS অন্তত ১০ হাজার গ্রহ সম্পর্কে জানতে সাহায্য করবে যাদের অনেক গ্রহই পৃথিবীর ন্যায় হবে।
এই প্রসঙ্গে নাসার এস্ট্রোফিজিক্স ডিভিশনের পরিচালক পল হার্জ বলেন,বিগত কেপলার মিশনের মাধ্যমে আমরা শিখেছি যে আকাশে তারার চাইতে গ্রহের সংখ্যা বেশি তাই অধিক উজ্জ্বলতা সম্পন্ন নক্ষত্রদের এই মিশনে পরীক্ষা করা হবে
নাসা গোডার্ড মিশনটি পরিচালনা করেন টেলিস্কোপটি এমআইটিতে প্রস্তুত করা হয়েছে 78 মিলিয়ন ডলারের এই টেলিস্কোপ 13.5 দিনে একবার পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করবে এই টেলিস্কোপ প্রথম প্রস্তাব করে গুগল 2010 সালে গুগল এর ব্যয়ভার এর দায়িত্ব নেয় 2013 সালে এম আই টির ডিজাইন নাসার এক্সোপ্লানেট সার্ভে টিম কে সন্তুষ্ট করতে পারার পরে নির্মাণ কাজ শুরু হয় 300 আলোকবর্ষ সীমার মধ্যবর্তী নক্ষত্রগুলোকে পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে এক নতুন যুগের সূচনা করবে বলে জ্যোতি পদার্থবিজ্ঞানীদের বিশ্বাস

No comments

Post a Comment

Don't Miss
© all rights reserved.
Made with by Science Tech BD