Responsive Ad Slot

সর্বশেষ

latest

সায়েন্স ফিকশন -হেড কেস

Monday, 1 July 2019

/ by Admin

মানব মন দুইজনকে ধারণ করার মত অতটা বড় না। তার উপর যদি একজন হয় ভূত।
এক.
আমি যথারীতি জ্যাকের শরীরে জেগে উঠলাম। চোখ খুলতেই সোফার ছেড়া অংশটা চোখে পড়ল। পাজি বিড়ালটা যেখানে বসে বসে আঁচড় কাটছিল।
পাশেই দাড়িয়েছিল পল। সেদিকে চোখ পড়তেই সশব্যস্তে বলে উঠল,মাথার নিচে বালিশ দিয়েছি। যাতে তুমি আগের মত জেগে উঠেই মাথা দিয়ে দেয়ালে বাড়ি দিয়ে না বস।
ওহ! ভাল লাগল না আমার। বললাম,ঠিক আছে।পল হাসল, চা দিতেছি বলে  রান্নাঘরের দিকে চলে গেল।

মাথা থেকে বৈদ্যুতিক হেয়ারনেটটা খুলে পাশেই সোফার ওপর রেখে দিলাম। উঠে হাঁটাচলা শুরু করতে কিছু সময় লাগবে। জ্যাকের বিড়ালটা দূর থেকে সতর্কভাবে আমাকে খেয়াল করছিল। সে সবসময় বোঝে যে,আমি জ্যাক না।
পল চা (সাদা,পর্যাপ্ত চিনি,আমার পছন্দের) নিয়ে আবার ঘরে প্রবেশ করল। হাতে তার এক প্যাকেট বিস্কিট (অরেঞ্জ রঙের,আমার ফেভারিট)। তার শক্ত মুখ আর দাড়ি-গোফ দেখলেই বোঝা যায় লিডার হিসেবে সে যথেষ্ট পাকাপোক্ত। যদিও সে আমাকে অনেক পছন্দ করে কিন্তু কেউই তাকে পছন্দ করে না। অনেক অভিযোগ থাকলেও আজ পর্যন্ত কেউ তা প্রমাণ করতে পারেনি।
নাহ,আজ আর না ঘুমালেও চলবে। কোন কোন সময় এই পরিবর্তনের পর মনে হয় যেন আমি কয়েক মাইল দৌড়িয়ে এসেছি। কোন সময় অবশ্য অনেক সহজ লাগে, জানি না কেন। জ্যাক কি কোন কিছু বলে বা লিখে গেছে?মনে হয় না

জ্যাক সমসময় আমার জন্য ছোট হলেও নোট লিখে যায়। বেশিরভাগই ছোটখাট বিষয়আমার ঠাণ্ডা লেগেছে,সময়মত এন্টিবায়োটিক ডোজ শেষ করো,এই জাতীয়। কোন কোন সময় মজার কার্টুন,ছোট খাট খবরের কাগজের টুকরাও রাখে। আশা করছিলাম সেরকম কিছু একটা থাকবে।

দুই.
পল গাড়ির চাবি দিল,তারপর একটা হাসি দিয়ে কাজে রওয়ানা হয়ে গেল। অন্যান্য গ্রীষ্মকালের দিনের মত একটা দিন হলেও সিডনি শহরের আকাশ আজ পরিষ্কার,সাথে ঠাণ্ডা বাতাস । জীবনটা কত সুন্দর। কিছুক্ষণ চলার পর বৃদ্ধাশ্রমের সামনে পৌছিলাম। ক্রিসমাস বারবিকিউ চলছিল। আমাকে দেখেই আন্টি ম্যুরেল একটা স্টিক এগিয়ে দিলেন,খেলে সমস্যা হবে?
দুই একটা চলবে
ওহ, আমাকে তিনি জড়িয়ে ধরতেই তার শরীরে ল্যাভেণ্ডারের গন্ধ পেলাম। আন্টি মুরেলই আমি আর জ্যাকের একমাত্র আত্মীয়। সুযোগ পেলেই দেখা করি। ব্যবসায় প্রতারিত হয়ে তিনি চুপচাপ মেরে গিয়েছিলেন। আঘাতটা হজম করে নিয়েছেন। যদিও যমজ হলেও ছোটবেলা থেকেই আমাদেরকে দেখলেই বলে দিতে পারতেন কার নাম কী। আমি সবসময় পরিপাটি থাকি,তিনি ভালই বুঝেন।

আন্টি এক প্লেট চিংড়ি নিয়ে এলেন। তারপর বসে গল্প শুরু করলেন। কেন জানি আজকাল জ্যাকের শরীরে আমি তোমাকেই বেশি দেখি। চোখে পানি। মজাও লাগে,যখন মনে হয় তুমিই দুর্ঘটনার আগের সেই জ্যাক। পলের সাথে কাজ করতে গিয়ে জ্যাক কেমন জানি চেঞ্জ হয়ে গেছে। আগের মত আর কথা বলে না, চুপচাপ থাকে।
কই আমার কাছে তো মনে হয় না।
অনেক দিন হয়ে গেছে। প্রায় পাঁচ বছর দেখ না তাকে। দেখলে বিস্মিত হতে।
পলকে তো হাসিখুশিই দেখি
হয়ত তোমার সামনে-আন্টি বলল স্বগতভাবে।
আমি দুঃখিত ভাবিনি এভাবে।
আন্টি আড়চোখে গ্লাসের দিকে তাকাল। আমার বয়সে দুই গ্লাস পানিই তোমার কাছে অনেক মনে হবে। জানি না আসলে কি হয়েছে। কিন্তু তোমাকে বলি,কখনো আমি কাউকে এত দুঃখিত হতে দেখিনি। ওর বাসায় মনেই হবে না যে ফুল নিয়ে যায়। যেন একটা মৃত্যুপুরী।
আন্টি সরাসরি আমার দিকে তাকাল। অনেক কিছুই তুমি জান না!

হয়ত কিছুদিন আগেই ঘটেছে,কারণ এই প্রথম আমি শুনেছি। যদিও আমার কাছে বলতে চায়নি সে কিছুই। স্ট্র দিয়ে জুসের বুদবুদের ওপর একটা টান দিলাম। আমাকে কখনও - বলেনি ও। আমি কিইবা করতে পারি!
তাই না! আন্টি তীক্ষ্ণ চোখে তাকাল। কি একটা অস্বাভাবিক জীবনযাপন করছ তোমরা দুজনেই!
চলবে......

No comments

Post a Comment

Don't Miss
© all rights reserved.
Made with by Science Tech BD