Responsive Ad Slot

সর্বশেষ

latest

সম্প্রসারণশীল মহাবিশ্ব-০৭

Sunday, 24 November 2019

/ by Admin

প্রকৃতপক্ষে মহাবিশ্বে ডার্ক ম্যাটারের পরিমাণ সাধারণ বস্তুর তুলনায় অনেক বেশি। কিন্তু এই সব ডার্ক ম্যাটার যােগ করেও আমরা প্রসারণ থামানাের মতাে প্রয়ােজনীয় ভরের মাত্র দশ ভাগের প্রায় এক ভাগ ভর পাই । কিন্তু মহাবিশ্বে আরেক ধরনের ডার্ক ম্যাটারও থাকতে পারে, যা সর্বত্র সমানভাবে ছড়িয়ে আছে। আমরা এখনও এটি শনাক্ত করতে পারিনি। তবে এটি পাওয়া গেলে মহাবিশ্বের গড় ঘনত্ব আরও অনেক বেশি হতে পারে । নিউট্রিনাে নামে এক ধরনের মৌলিক কণিকা আছে। এরা সাধারণ পদার্থের সাথে কোনাে ক্রিয়া করে না বলে এদেরকে শনাক্ত করা খুব কঠিন (সম্প্রতি নিউট্রিনাে নিয়ে পরিচালিত একটি পরীক্ষায় পানির নিচে ব্যবহৃত একটি ডিটেকটরের পঞ্চাশ হাজার টন পানির প্রয়ােজন পড়ে)। আগে মনে করা হতাে এদের ভর নেই বলে এরা মহাকর্ষীয় আকর্ষণও অনুভব করে না। কিন্তু কয়েক বছর আগে পরিচালিত অনেক গুলাে পরীক্ষায় দেখা গেছে এদের সামান্য ভর আছে, যা আগে শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। যদি ভর থেকে থাকে, তবে তা ডার্ক ম্যাটারের একটি রূপ হতে পারে। নিউট্রিনাের এই ভরের কথা হিসেবে ধরলেও মহাবিশ্বের প্রসারণ থামানাের মতাে প্রয়ােজনীয় ভরের চেয়ে অনেক কম ভর পাওয়া যায়। এ কারণে সম্প্রতি পদার্থবিদরা আপাতত ফ্রিডম্যানের দ্বিতীয় মডেলটির ব্যাপারে একমত হয়েছেন।

এরপর পাওয়া গেল নতুন কিছু পর্যবেক্ষণ । গত কয়েক বছরে গবেষকদের কয়েকটি দল পেনজিয়াস ও উইলসনের আবিষ্কৃত মাইক্রোওয়েভ পটভূমি বিকিরণের তরঙ্গ নিয়ে কাজ করেছেন। এই তরঙ্গের যে সাইজ, তাতে এ থেকে মহাবিশ্বের বড়মাপের কাঠামাে সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যাচ্ছে । ফ্রিডম্যানের তৃতীয় মডেলের মতােই এর ইঙ্গিত সমতল মহাবিশ্বের পক্ষে । একে ব্যাখ্যা করার মতাে সাধারণ বস্তু ও ডার্ক ম্যাটারের পরিমাণ যথেষ্ট না হওয়াতে পদার্থবিদরা আরেক ধরনের বস্তুর কথা ভাবছেন। এর নাম ডার্ক এনার্জি ।

সম্প্রতি আরও কিছু পর্যবেক্ষণ জটিলতা আরেকটু বাড়িয়ে দিয়েছে । দেখা গেছে যে মহাবিশ্বের প্রসারণ হার না কমে বরং দিন দিন বাড়ছে। ফ্রিডম্যানের একটি মডেলেও এই কথা নেই। এটি খুবই অবাক করা ব্যাপার, কারণ মহাবিশ্বের ঘনত্ব কম হােক বা বেশি-বস্তুর উপস্থিতিতি তাে প্রসারণ কিছুটা কমাবেই । আর তা ছাড়া মহাকর্ষ তাে কেবল আকর্ষণই করে (বিকর্ষণ নয়)। প্রসারণ হার বেড়ে যাওয়াকে বােমার বিস্ফোরণের সাথে তুলনা করা যায় । কিন্তু এখানে বিস্ফোরণের পর দুর্বল হবার বদলে বােমার
প্রতিক্রিয়া আরও শক্তিশালী হচ্ছে। কোন সেই শক্তি, যা ক্রমেই দ্রুততর গতিতে মহাবিশ্বকে ছড়িয়ে দিচ্ছে। এর উত্তর নিশ্চিত করে কেউ জানে না । কিন্তু আইনস্টাইন যে মহাজাগতিক ধ্রুবক (ও তার অ্যান্টিগ্র্যাভিটি ইফেক্ট । বিপরীত মহাকর্ষ প্রভাব) নিয়ে এসে ঠিকই করেছিলেন এটা তার পক্ষে। প্রমাণ হতে পারে । | প্রযুক্তির দ্রুত উন্নতি ও নতুন ধরনের উপগ্রহ টেলিস্কোপের কল্যাণে আমরা মহাবিশ্ব সম্পর্কে ক্রমশ নতুন নতুন বিস্ময়কর তথ্য জানতে পারছি। ভবিষ্যতে মহাবিশ্বের কী হবে তা সম্পর্কে এখন আমাদের জ্ঞান বেশ ভালাে; মহাবিশ্ব চিরকাল প্রসারিত হবে এবং প্রসারণের হার ক্রমাগত বাড়বে। সময়ও চলবে চিরকাল পর্যন্ত, তবে যারা ব্ল্যাকহােলে পড়ে যাবার মতাে বােকামি করবে তাদের কথা আলাদা। কিন্তু মহাবিশ্বের প্রাথমিক অবস্থার কী খবর? এর শুরু কীভাবে হলাে, প্রসারণইবা শুরু হয়েছিল কী করে?

নােট-
১. এদের সবাই অবশ্য একসাথে একই রাতে নাও থাকতে পারে । 

২. একই কারণে গ্রহরা যেহেতু আরও অনেক বেশি কাছে, তাই দূরের তারকাদের
তুলনায় এদের নড়চড়া খুব বেশি চোখে পড়ে । 

৩, কোনাে বস্তু অন্য বস্তুর চারপাশে কক্ষপথে টিকে থাকে দুটো বলের প্রভাবে ।
একটি হলাে, কেন্দ্রীয় বস্তুটির মহাকর্ষীয় টান। অপরটি হলাে বস্তুটির কক্ষপথের বেগ, যা কেন্দ্রবিমুখী বলের জোগান দেয়। মহাকর্ষ বল একমুহূর্তের জন্য অনুপস্থিত হলে অপর বলটির প্রভাবে কক্ষপথ থেকে বস্তুটি নাক (স্পর্শক) বরাবর বাইরে ছিটকে যাবে। এখন এ ক্ষেত্রে গ্যালাক্সিদের বাইরের দিকের নক্ষত্ররা যে গতিতে ঘুরছে তাতে কেন্দ্রীয় মহাকর্ষ এদেরকে কক্ষপথে ধরে রাখতে পারার কথা নয়।

No comments

Post a Comment

Don't Miss
© all rights reserved.
Made with by Science Tech BD