দিনাজপুর: দিনাজপুর
এম আব্দুর রহিম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের এক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের
অভিযোগ এনে কোতোয়ালি থানায় মামলা দায়ের করেছেন ৩০ বছর বয়সী এক তরুণী।
মঙ্গলবার
(১২ মে) দুপুর সাড়ে ১২টায় দিনাজপুর কোতোয়ালি থানায় ওই তরুণী বাদি হয়ে
দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ডা. নরদেব রায়ের (৩৩)
বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা দায়ের করেন।
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দিনাজপুর কোতোয়ালি থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) বজলুর রশিদ।
ধর্ষণের অভিযুক্ত দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম
মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ওই চিকিৎসক হলেন পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলার
প্রেমবাজার এলাকার মনোরঞ্জন রায়ের ছেলে ডা. নরদেব রায়।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, দিনাজপুরের
বিরল উপজেলার কাশিডাঙ্গা এলাকার বাসিন্দা ওই তরুণী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা
করা অবস্থায় এম আব্দুর রহিম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. নরদেব
রায়ের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। দীর্ঘ দুই বছর প্রেমের সম্পর্কের
কারণে ওই চিকিৎসক একাধিকবার বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ওই তরুণীকে হাসপাতালের
আবাসিক কোয়ার্টারে নিয়ে গিয়ে ইচ্ছার বিরুদ্ধে ধর্ষণ করেন।
ওই তরুণী এজাহারে উল্লেখ করেন, প্রেমের
সম্পর্কের কারণে এবং বিয়ে করবে এমন প্রতিশ্রুতি দিয়ে আমাকে একাধিকবার ডা.
নরদেব রায় তার নিজস্ব কোয়ার্টারে নিয়ে গিয়ে ইচ্ছার বিরুদ্ধে ধর্ষণ করেন।
আমি বিয়ের করার কথা বললে আজকাল করে কালক্ষেপণ করতে থাকেন।
সর্বশেষ গত রোববার (১০ মে) আমাকে ডা. নরদেব
রায় মোবাইল ফোনে কল করে দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিক্যাল কলেজের আবাসিক
এলাকার একটি কোয়ার্টারের ৪র্থ তলায় আসতে বলেন। সরকারি কোয়ার্টারে দুপুর
২টার সময় আমি ডা. নরদেব রায়ের কাছে যাই। সেখানে গিয়ে আমি কিছুটা সময়
কাটানোর পর ডা. নরদেব রায়কে বিয়ের কথা বললে তিনি আমাকে বিভিন্ন কারণে বিয়ে
করতে অনীহা প্রকাশ করেন। এক পর্যায়ে সন্ধ্যা ৬টার দিকে কোয়ার্টারের রুম
থেকে আমাকে বের করে দিতে চাইলেও আমি বের হইনি। পরে ডা. নরদেব রায় আমাকে
কিল-ঘুষি মেরে কোয়ার্টার থেকে বের করে দেওয়ার চেষ্টা করেন। আমি ঘর থেকে বের
না হতে চাইলে তিনি নিজেই ঘরে তালা লাগিয়ে পালিয়ে যান। ওইদিন রাত ১২টার
দিকে কোনো উপায় না পেয়ে আমি সরকারি সেবার ৯৯৯ নাম্বারে কল করে পুলিশের
সহযোগিতা চাই। পরে পুলিশ এসে রাতেই আমাকে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে থানায়
নিয়ে আসে।
ধর্ষণের বিষয়টি জানার জন্য ডা. নরদেব রায়কে
ফোন করা হলে তার মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। ওই চিকিৎসকের বড় ভাই পঞ্জগড়
মহিলা কলেজের প্রভাষক জয়দেব বর্মন বলেন, ‘এটা একটা সাজানো ফাঁদ। আমার ভাই
একটা চক্রান্তের মধ্যে পড়ছে। ধর্ষণের বিষয়টি ভিত্তিহীন ও মিথ্যা। ওই মেয়ের
সঙ্গে আমার ভাইয়ের কোন সম্পর্ক নেই।’
এ বিষয়ে দিনাজপুর কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক
(তদন্ত) বজলুর রশিদ জানান, একজন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা হয়েছে।
বর্তমানে তিনি পলাতক আছেন। মেয়েটিকে পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য দিনাজপুর এম
আব্দুর রহিম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে এম আব্দুর রহিম
মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. নির্মল চন্দ্র দাস বলেন, ‘মামলার
বিষয়টি জেনেছি। তবে পুলিশ অথবা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ যদি আমাদের কাছে
লিখিতভাবে কিছু জানতে চায় তাহলে আমরা জানাব।’
>>আপডেট নিউজ পেতে নিচের ফেইসবুক পেইজে লাইক দিয়ে আমাদের সাথে থাকুন।
No comments
Post a Comment