১৭ই এপ্রিল, ২০১৮ তে Nature Communication -এ একটি পেপার
প্রকাশিত হয় যেটা থেকে সৌরজগতের
এক ধ্বংস হয়ে যাওয়া
আদি গ্রহের ইঙ্গিত
মিলছে।
আমাদের সৌরজগতে ৮টি গ্রহ; যেটা আমরা জানি।
তবে বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, এই বর্তমান
গ্রহ, উপগ্রহ, গ্রহাণু ইত্যাদি
জ্যোতিষ্ক সৃষ্টির
আগে আরও গ্রহ বা গ্রহাণু
ছিল। যাদের বলা হয় protoplane । এগুলিই একত্রিত
হয়ে তৈরি হয়েছে
বর্তমান গ্রহ ব্যবস্থা।
কিন্তু এই তত্ত্বের
কোনো জোরদার প্রমাণ
পাওয়া যায় নি। এই প্রথমবার এর প্রমাণ
পাওয়া গেল। তাও আবার একটি পাথর পরীক্ষা
করে।
আলমাহাতা সিট্টা
|
পাথরটি আসলে একটি উল্কা
পিন্ড। যার নাম আলমাহাতা
সিট্টা (Almahata Sitta)। ২০০৮ সালে সুদানে
এটি পাওয়া যায়। উল্কাটি
একধরনের ইউরেলাইট। এটি তৈরি হয়েছে
তীব্র চাপ ও উষ্ণতার
প্রভাবে এবং এর মধ্যে
কার্বন, লোহা ও ম্যাগনেশিয়ামের পরিমাণ বেশি করে রয়েছে।
এটা মনে করা হয় যে, সমস্ত
ইউরেলাইট একই জায়গায়
তৈরি হয়েছে যাদিও
তা নিশ্চিত করে বলা সম্ভব
নয়। সে যাই হোক এগুলি
তৈরি হয় খুবই চরম পরিবেশ।
যেমন- পৃথিবীর ভিতর।
এর আগেও এরকম পাথর পাওয়া
গিয়েছে। এদের মধ্যে
আলমাহাতা সিট্টা
একটু বিশেষ বলা যায়। বিজ্ঞানীরা
পাথরটির আণুবীক্ষণিক গঠন পর্যবেক্ষণ করে এর মধ্যে
হিরের সন্ধান পান। কিন্তু
এটিই এর প্রধান
বিশষত্ব নয়।
আমরা জানি হিরা তৈরি হয় পৃথিবীর
গভীরে। ইউরেলাইটও
সেরকরম পরিবেশে
তৈরি হয়। তাই হিরার
উপস্থিতি তেমনটাও
অবাক করেনি। কিন্তু
এর গঠনের মধ্যে
যে তথ্য লুকিয়ে
ছিল সেটা বিস্ময়ের।
হিরা হল একটি কেলাসাকার
বস্তু যার মধ্যে
কার্বনের পর্যাবৃত্ত
সজ্জা উপস্থিত। আর এই কেলাসের
গঠন বলে দেয় সেই চরম পরিবেশের
অবস্থা যার জন্য কেলাসের
এরূপ গঠন হয়েছে।
গবেষণায় উঠে আসে আলমাহাতা
সিট্টা নামের
পাথরটি তৈরি হয়েছে
২০ গিগা পাস্কাল
(সাধারণ বায়ুর
চাপের প্রায় ২০ লক্ষ গুন) চাপে।
এই রকম চাপ পৃথিবীর
উপরি ম্যান্টলে পাওয়া
যায়। এর মানে দাড়ালো
পাথরটি পৃথিবীর
মতই কোনো গ্রহের
ম্যান্টলে তৈরি হয়েছে।
অথবা মঙ্গল কিংবা
বুধের আকারের গ্রহের
ভিতর কিন্তু আলাদা
রাসায়নিক গঠনের।
এখন সমস্যা
হল, এরকম কোনো গ্রহ নেই সৌরজগতে।
কিন্তু এরকম উল্কার
উপস্থিতি প্রমাণ
করে অতীতে কোনো গ্রহ ছিল যা ধ্বংস
হয়ে গিয়েছে। এখন হয়তো সেই গ্রহের
ধ্বংসাবশেষগুলি উল্কা, গ্রহাণুর
হয়ে ঘুরে বেরাচ্ছে।
আবশ্যই আরও গবেষণার প্রয়োজন প্রোটোপ্লানেটের উপস্থিতির সাপেক্ষে। তবে একটা কথা বলতেই হয়- একটি পাথর অনেক বিস্ময়ের গল্প বলে দেয়।
No comments
Post a Comment